তরাই-ডুয়ার্সের পরিবেশ আবহাওয়া বসবাসের অনুকূল ছিল না। অতীতে ম্যালেরিয়া, প্লীহা, গুটি বসন্ত, অন্ত্রের রোগ, গল্গগন্ড, যক্ষ্মা ছাড়াও আরও বেশ কিছু রোগের প্রাদুর্ভাব ছিল। প্রতি বছর প্রচুর মানুষের প্রাণ হানি ঘটত এইসব রোগে। রীতিমত ভয়ংকরই ছিল বলা যায়।

আর চিকিৎসা ব্যবস্থা বলতে ছিল ভেষজ লোক চিকিৎসাবিধি ঝাড়ফুঁক, তুকতাক সহ মন্ত্রাদি পূজা-পার্বণ নির্ভর। এরকম প্রতিকূল পরিবেশেও বেশকিছু জনগোষ্ঠী বিশেষ করে ইন্দোমঙ্গোলীয় বোড়ো গ্রুপের মেচ, কোচ, রাভা, রাজবংশী, গারো, টোটো, ধীমাল, থারু, ড্রুকপা, লেপচা জনজাতির মানুষজন ছড়িয়ে-ছিটিয়ে বসবাস করত। বন ও মাটি নির্ভর এই জনজাতিগুলি বনজ সম্পদ সংগ্রহ, পশুপালন এবং ঝুম-ক্ষেত্রান্তরি চাষে অভ্যস্ত ছিল। সর্বোপরি এইসব জনগোষ্ঠী প্রতিকূল পরিবেশেও অভিযোজনগত ক্ষমতা অর্জন করে বনের সঙ্গে সম্পৃক্ত হয়ে। পরবর্তীকালে লাঙ্গল দিয়ে চাষবাসে অভ্যস্ত হলেও বনজ নির্ভরতাকে এরা বিসর্জন দেয়নি। যা তাদের জীবনাচরণে একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। সেটা মেচ, রাভাদের ক্ষেত্রে যেমন প্রযোজ্য তেমনি রাজবংশী জনগোষ্ঠীর ক্ষেত্রেও প্রাসঙ্গিক।