জোড়াসাঁকো ঠাকুরবাড়িরই কন্যা ও বধূ প্রতিমা দেবী৷ তাঁরই অনন্য জীবন ও সৃষ্টিকর্ম নিয়ে এই গ্রন্থ৷ বলতে গেলে প্রায় প্রাথমিক স্তর থেকে যে পাঠ শুরু--- অসাধারণ শিক্ষকদের থেকে পাঠ নিয়ে অসামান্য ধীশক্তির গুণে, ঐকান্তিক সাধনায় অল্পসময়েই রবীন্দ্রনাথের প্রিয় শিষ্যা পুত্রবধূটি শিল্পকলা, নাট্যকলা, নৃত্য বিষয়ে পারঙ্গমতা অর্জন করেন৷ তাঁর অঙ্কিত ছবি, মৌলিক চিন্তাভাবনায় জারিত গ্রন্থগুলির বিষয়ের গভীরতা ও বৈচিত্র, লিখন নিপুণতা আমাদের মুগ্ধ করে৷ গুরুদেবের আদর্শে প্রাণিত প্রতিমা দেবী বিশ্বভারতীর সার্বিক উন্নয়নে, সমাজকল্যাণে, পল্লীউন্নয়ন কর্মে নিজেকে উজাড় করে দিয়েছিলেন৷ অহরহ রবীন্দ্র পরিমণ্ডলে বাস করে, বহু ভ্রমণের অভিজ্ঞতায় গড়ে উঠেছিল তাঁর গুণগ্রাহী, সপ্রতিভ, সহানুভূতিশীল, ক্ষমাসুন্দর উদার ব্যক্তিত্ব৷ হয়ে উঠেছিলেন আশ্রমবাসীর একান্ত নির্ভরতার স্থল প্রিয় "বউঠান"৷ রবীন্দ্রনাথের প্রয়াণের পরে রথীন্দ্র-প্রতিমার দাম্পত্যে আসে বিচ্ছেদ কবিপুত্র রথীন্দ্রনাথ ত্যাগ করে যান বহু সাধনা, স্বপ্ন ও শ্রমে গড়া বিশ্বভারতী, পরিজন এমনকি পত্নী প্রতিমাকেও৷ জীবনের শেষবেলায় উত্তরায়ণের কোণার্ক গৃহে একাকী রোগজীর্ণ শরীরে দিন কেটেছে প্রতিমার৷ অবশেষে ৯ই জানুয়ারি, ১৯৬৯, ৭৬ বছর বয়সে প্রয়াত হন প্রতিমা দেবী৷ এই বইতে এই মহীয়সী নারীর জীবন ও কর্মকে একত্রিত করবার চেষ্টা হয়েছে সম্ভবত এই প্রথমবার৷